নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে
আপনি নিশ্চয়ই নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য। আপনি হয়তো জানেন না নিম গাছ আমাদের জন্য কতটা উপকারী। বাড়ির আশেপাশে হয়ে থাকে এই কারণে আমরা নিম গাছের কদর করতে পারি না।
নিম গাছ একটি ঔষধি গাছ। আমাদের বিভিন্ন রোগের মহৌষধ। দাদ, হাজা, চুলকানি আর চর্মরোগের বিভিন্ন অসুকের জন্য নিমগাছের পাতা বা ডাল ব্যবহার করে থাকে মানুষ। নিম গাছের হাওয়াও আমাদের জন্য উপকারী। চলুন তার বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
- নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
- নিম পাতার পুষ্টিগুণ
- নিম পাতার ব্যবহার
- ত্বকের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
- চুল পড়া রোধে নিম পাতার গুরুত্ব
- নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
- খালি পেটে নিম পাতার রস খেলে কি হয়
- নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
- এলার্জি কমাতে নিম পাতার ব্যবহার
- নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা
- শেষ কথা, নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে আপনি ধৈর্য ধরে আর্টিকেলটি পড়ুন। নিম গাছ আমাদের দেশে অতি পরিচিত একটি বৃক্ষ এবং ঔষধি গাছ। যা দীর্ঘকাল ধরে নানা ধরনের সমস্যায় চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সমস্যা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি একটি চির সবুজ গাছ যার প্রতিটি অংশেই রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি গুনাগুন। সেই আদিম কাল থেকেই নিম গাছকে ঔষধি গাছ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নিম পাতা ও এর বিভিন্ন অংশে রয়েছে প্রায় ৩০ ধরনের ঔষধি গুনাগুন।
যা ত্বক থেকে শুরু করে শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গের নানা সমস্যা সমাধান করতে প্রস্তুত। এজন্য আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে নিমগাছ কে জাদু করে গাছ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের আধুনিক গবেষণায় ও নিম পাতার নানা ধরনের গুণাবলীর প্রমাণ দেখা যায়। প্রকৃতির এই অসাধারণ উপাদানটি আমাদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ যেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই গাছের গুরুত্ব স্বীকার করেছে এবং ২১ শতকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি গাছ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় বিশেষ করে ভারত পাকিস্তান বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় নিম গাছ ব্যাপকভাবে পাওয়া যায় এবং এগুলো দেশের মাটির জন্য নিম গাছ খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে। নিম গাছের বিভিন্ন গুণাবলীর জন্য এটি সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য সুপরিচিত। নিম গাছের পাতা আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় অসাধারণ ভূমিকা রাখে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নিম পাতার পুষ্টিগুণ
নিম গাছ সহজলভ্য হওয়ায় সচেতন ও উপযুক্ত জ্ঞানের অভাবে কেউ তার যত্ন করে না। কিন্তু নিম গাছের পাতার যে পুষ্টিগুণ তা সম্পর্কে মানুষ এখনো অসচেতন। তাই বাড়ির আশেপাশে গাছ দেখলে তা কেটে ফেলে। নিম গাছের পাতার ব্যবহার কবিরাজ তার চিকিৎসকের কাজে এবং সাধারণ মানুষ তার প্রয়োজনে নিয়মিত ব্যবহার করে থাকে। নিমপাতা একটি অত্যন্ত উপকারী ঔষধি গাছ যার পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকার।
এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আন্টি ব্যাকটেরিয়াল এন্টিভাইরাল এবং এন্টিফাঙ্গাল উপাদান যা আমাদের শরীরকে নানা সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে থাকে। নিম পাতায় পাওয়া যায় ভিটামিন সি ভিটামিন ই ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের ত্বক চুল ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিম পাতা পিসে লাগালে চুলের গোড়া শক্ত ও খুশকি দূর হয়। এছাড়াও এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম আয়রন ফসফরাস ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম আমাদের শরীরের হাড় ও দাঁত মজবুত করে।
আমাদের ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যা হয় ব্যাকটেরিয়ার কারণে। তাই মিমের এন্টি ব্যাকটেরিয়াল গুনাগুন ব্রোন নির্মূল করতে এবং ত্বক পরিষ্কার রাখতে নিম পাতা ব্যবহার করা হয়। নিয়মিত নিম পাতা পেস্ট বা নিমের রস ব্যবহার করলে মুখের ব্রণ গায়েব হয়ে যায়। নিমপাতা ত্বক থেকে মৃত কোষ বের করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও কমল করে তোলে।
নিম পাতার ব্যবহার
নিম পাতা প্রাচীনকাল থেকেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি ব্যবহার করে চিকিৎসা সৌন্দর্য ও দৈনন্দিন জীবনের নানা ক্ষেত্রে। নিম পাতার রস আমাদের শরীরের ভেতরে বিষাক্ত উপাদান দূর করে এবং রক্তকে পরিশুদ্ধ করে থাকে। অনেকে আমরা সকালে খালি পেটে কয়েকটি নিমপাতা চিবিয়ে খেয়ে থাকি যা আমাদের ত্বক পরিষ্কার ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নিম পাতায় রয়েছে ফাঙ্গাস ও ব্যাটারিয়া বিরোধী।
আমাদের ত্বকে যখন ব্রণ দেখা যায় তখন আমরা নিমপাতা থেতো করে লাগালে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। অনেকের মাথা আর ত্বকের চুলকানি ভাব এই নিম পাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালে চুলকানি কমে চুল শক্ত হয়, চুলের শুষ্কতা কমে যায় এবং নতুন চুল গজিয়ে থাকে। শুধু চুলের যত্নেই নয় ত্বকের চুলকানিতেও নিমপাতা বেটে লাগালে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। আর যদি নিয়মিত নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ পেস্ট করে আমাদের ত্বকে ব্যবহার করি, তাহলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও স্ক্রিনটন ঠিক থাকে।
নিমের তেলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই এবং ফ্যাটি এসিড থাকে যা আমাদের চুলের ও ত্বকের জন্য উপকারী। নিমপাতা রস খেলে আমাদের শরীরের পরিপাকতন্ত্রের গতি বাড়ে এবং বিষাক্ত পদার্থ দূর করে দেয় এবং রক্তের পরিশোধিতা করে। নিম পাতা ব্যবহার করলে আমাদের আর কসমেটিক্স এর দোকানে যেতে হবে না। কারণ ত্বকের জন্য নিম পাতায় যথেষ্ট।
ত্বকের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
ত্বকের যত্নে নিম পাতা একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকরী একটি উপাদান। এতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এন্টিফাঙ্গাল এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট গুন যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সক্ষম। নিয়মিত নিয়মিত নিম পাতা ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল থাকে। ব্রণ ও ফুসকুড়ি দূর করতে নিমপাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে মুখ ধুলে ব্রণ ও ফুসকুড়ি কমে যায়। নিম পাতা পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগালে দাগ ও গালসে ভাব দূর হয়ে যায় এটি ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করে এবং ত্বক ঠান্ডা রাখে।
নিমপাতা সিদ্ধ পানি বোতলে করে ফ্রিজে রেখে দিতেও পারেন কোন ফেসপ্যাক পেস্ট করার সময় পানির বদলে নিম পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও দাঁত চুলকানি বা এলার্জির সমস্যায় নিমপাতা সিদ্ধ পানিতে স্নান করলে উপকার পাওয়া যায়। নিম পাতা পেস্ট করে মুখ ধৌত করলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।এছাড়া নিম পাতার রস ত্বকের কোন ইনফেকশন হলে তা প্রতিরোধ করতে ভূমিকা রাখে। তাই বলা যায় নিমপাতা প্রাকৃতিক ত্বক পরিচর্যার এক অনন্য উপাদান যা আমাদের ত্বককে পরিষ্কার, সতেজ ও সুন্দর করে থাকে।
চুল পড়া রোধে নিম পাতার গুরুত্ব
চুলের যত্নে নিমপাতা একটি প্রাকৃতিক উপাদান। নিমপাতা আমাদের চুলের জন্য খুবই উপকারী। আমাদের চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় নিমপাতা আমাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করে থাকে। যেমন চুলের গোড়া মজবুত, মাথার উকুন দূর করা এবং চুল পড়া কমানো ইত্যাদি। নিমপাতা আমাদের চুলের গোড়ায় থাকা ও কোন ধ্বংস করতে সাহায্য করে কারণ এতে রয়েছে বিশেষ ধরনের উপাদান যা উকুনকে চুলের গোড়া থেকে শুরু করে চুল পরিষ্কার সব কাজে নিম পাতা ব্যবহার করা হয়।
নিম পাতার পুষ্টি উপাদান চুলের গোড়া শক্ত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে নিম পাতা দিয়ে চুল পরিষ্কার করলে চুলের খুশকি দূর হয় এবং চুল পড়া সমস্যা কমে যায়। এছাড়াও নিমপাতা মুখের জীবাণু দূর করে এবং মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে থাকে। নিম পাতার অ্যান্টি ইনক্রিমেন্টরি বৈশিষ্ট্য মারির ব্যথা কমায় এবং দাঁতের মাড়ি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
পাশাপাশি নিমের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করলে দাঁতের ময়লা পরিষ্কার হয় এবং দাঁতের ক্যাভিটি ও দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। মিমের এন্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলী আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি শরীরের বিভিন্ন জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে পারে। তাই বলা যায় নিমপাতা এমন একটি উপাদান যার রাসায়নিক ছাড়াই চলে সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য রক্ষা করে থাকে।
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
নিমপাতা একটি প্রাকৃতিক ঔষধি গাছ হলেও এর যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি রয়েছে এর ক্ষতিকর দিক বিশেষ করে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে। নিম পাতার তিক্ত স্বাদ আমাদের শরীরের জন্য ভালো হলেও অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে বমি ডায়রিয়া বা পেট ব্যথা হয়ে থাকে। এতে থাকা কিছু যোগ্য যেমন নিবিন শরীরের বিপাক ক্রিয়ার প্রভাব ফেলতে পারে যার ফলে হজমের সমস্যা ও খুদা মান্দা দেখা দেয়। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিম পাতা একেবারেই অনুপযোগী কারণ এদের গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
এছাড়াও স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে নিম পাতা বা নিমের তেল গ্রহণ নিরাপদ নয় কারণ এটি দুধের মাধ্যমে শিশুর শরীরে গিয়ে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। নিম পাতা প্রাকৃতিক হলেও শিশুদের জন্য অনুপযোগী। শিশুদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং লিভারপূণ্য বিকাশিত হয় না ফলে নিম পাতার মধ্যে থাকা শক্তিশালী অ্যালকালয়েড এবং অন্যান্য যৌগ শিশুদের শরীরে বিপর্যয় ঘটাতে পারে। অতিরিক্ত নিমপাতা সেবনে শিশুদের লিভারের সমস্যা হতে পারে এবং তাকে অ্যালার্জি বা রেসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত নিমপাতা ব্যবহার করলে লিভারের উপর প্রভাব পড়তে পারে। এতে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং দীর্ঘমেয়াদে লিভারে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। তাই আমাদের উচিত দীর্ঘ মেয়াদে নিমপাতা এড়িয়ে চলা। অতিরিক্ত নিমপাতা খাওয়ার ফলে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে ফলে আমাদের মাথা গড়া এবং দুর্বলতা দেখা দেয়। শিশুদের জন্য নিম পাতা বা নিম তেল সে বনে অত্যন্ত বিপজ্জনক কারণ এটি স্নায়ুতন্ত্রের প্রভাব ফেলে এবং গুরুতরজ্জলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই নিম পাতা উপকারী হলেও অতিরিক্ত বা ভুলভাবে ব্যবহার করলে তা ক্ষতিকর কারণ হতে পারে।
খালি পেটে নিমপাতার রস খেলে কি হয়
খালি পেটে নিম পাতার রস পান করা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী ।এটি প্রাকৃতিক অভ্যাস হিসেবে গড়ে তোলা উচিত। সকালে খালি পেটে চার থেকে পাঁচটি নিমপাতা বেটে বা রস করে খেলে শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এটি আমাদের শরীরের ভেতরের বিষাক্ত পদার্থ টক্সিন দূর করে এবং রক্ত পরিশুদ্ধ করে থাকে। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও ব্রণ দাদ বা চুলকানির মত ত্বকের সমস্যা প্রতিরোধে সক্ষম। প্রতিদিন নিয়মিত খেলে নিম পাতার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এছাড়াও নিমপাতা ঠান্ডা কাশি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে জ্বর সর্দি-কাশির সময় নিয়মিত নিম পাতা খেলে সকল সংক্রমণ থেকে আপনি সুস্থ থাকবেন। শুধু তাই নয় নিমপাতা আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে থাকে। নিম পাতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য বা উপকারিতা হল এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।
এতে রয়েছে কিছু যৌগ যা আমাদের রক্তে সরকারের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে থাকে। নিম পাতা আমাদের রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে। নিমপাতা চোখের চুলকানি ও অস্থিতি দূর করতে সক্ষম। আপনি কয়টি নিমপাতা চুলাতে দিয়ে পানি দিয়ে ফুটিয়ে পানিকে ঠান্ডা করে তোলে চোখে লাগাতে পারেন। এটি আপনার চোখের চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করবে।
নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
নিম পাতার রস আমাদের জন্য খুবই উপকারী একটি উপাদান। এটি খেলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পাতা রস করার পদ্ধতি সম্পর্কে আগে একটু বলে নিই। নিম পাতার রস তৈরি করা খুবই সহজ প্রথমে ১০ থেকে বৃষ্টি তাজা পাতা ও সবুজ নিন পাতা ভালো ভাবে ধুয়ে নিন যেন ময়লা দূর হয়। এরপর আধা কাপ পানি ব্লেন্ডারে ঢেলে দিন এবং নিম পাতাগুলো ব্লেন্ডারে দিয়ে দিন। এরপর পাঁচ মিনিট ধরে পেস্ট করুন এরপর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে বা ছাঁকনি দিয়ে থেকে রস আলাদা করে নিন।
এতে একটু লেবুর রস বা এক চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারেন এতে তিক্ততা কিছুটা দূর হবে এবং পান করা সহজ হবে। এবার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন। সকালে খালি পেটে আদা গ্লাস পানি মিশিয়ে এক কাপ চামচ নিম পাতার রস পান করা সবচেয়ে উপকারী। এটি আমাদের শরীরের ভেতরের টক্সিন দূর করে রক্ত পরিশুদ্ধ রাখে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও আমাদের ডায়াবেটিস ত্বক বা লিভারের সমস্যা থেকে সমাধান দিতে সক্ষম।
তবে অতিরিক্ত সেবন করা উচিত নয় কারণ অতিরিক্ত সেবন করলে বমি ভাব মাথা ঘোরা বা পেট ব্যথা হতে পারে। সাপ্তাহে তিন দিন খেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। তাই বলা যায় সঠিকভাবে তৈরি ও পরিমান মত খেলে নিম পাতার রস আমাদের শরীরকে গড়ে তুলবে সুস্থ সতেজ ও রোগমুক্ত।
এলার্জি কমাতে নিম পাতার ব্যবহার
নিমপাতা এলার্জির সমস্যার দূর করতে প্রাকৃতিক একটি সমাধান। প্রতিদিন কয়েকটি নিমপাতা ও এক বালতি পানিতে ফুটিয়ে গোসল করলে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন এলার্জি সমস্যা দূর হয়ে যায়। নিমের এন্টি ইনফ্ল্যামেটরি ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য আমাদের ত্বকের সংক্রমণ ও অ্যালার্জি দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও আপনি যদি কাঁচা হলুদ এবং নিমপাতা বেটে একটি পেস্ট তৈরি করতে পারেন এবং শরীরের আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন তাহলে আপনার এনার্জি সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
এলার্জির কারণে তোকে চুলকানি লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি দেখা দিলে নিম পাতার ব্যবহার করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। এলার্জি কমাতে প্রথমে কিছুটা নিম পাতা পানি দিয়ে সিদ্ধ করে ঠান্ডা করে নাও এরপর সেই পানি দিয়ে গোসল করে নিলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়ে যাবে। কারণ এটি ত্বকের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে এবং প্রদাহ কমাতে সক্ষম। নিম পাতার রস ও অল্প পরিমাণ হলুদ মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে এনার্জি সমস্যা দূর হয়ে যায়। নিম পাতা পরিমাণ মতো খেলে শরীরের ভেতর থেকে টক্সিন দূর করে ফোনে এনার্জি পুনরায় ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা
নিম পাতার রস আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি প্রাকৃতিক উপাদান। নিম পাতা আমাদের দেহের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে থাকে যেমন চুলকানি ফুসকুড়ি এলার্জি হজম শক্তি ইত্যাদি।
- আমাদের শরীরের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- হাজাম সত্যি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
- আরে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- রক্তচাপ ও রক্ত পরিশোধন করতে সক্ষম
- আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
- আমাদের দেহ থেকে মৃত কোষ বের করে এবং বিভিন্ন কোষ রক্ষা করতে সাহায্য করে।
- এলার্জি নিরাময় করতে নিমপাতা কার্যকরী ভূমিকা রাখে
- আমাদের ত্বক উজ্জ্বল ও ব্রণ নিরামাই করতে সক্ষম।
শেষ কথা, নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা অবশ্যই জানতে পারলাম। নিম পাতা প্রকৃতির এক অনন্য দান যা ঔষধি গুন হাজার বছর ধরে আয়ুর্বেদ ও বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহার করে আসছে মানুষ। এতে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আমাদের শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখে রক্ত পরিশোধন করে এবং চুলের সমস্যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হজম শক্তি বৃদ্ধি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করা ও ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় নিম পাতার ভূমিকা সত্যি ই প্রশংসনীয়।
তবে এর পাশাপাশি কিছু সতর্কতা রয়েছে। অতিরিক্ত নিম পাতা খাওয়া আমাদের শরীরের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে যেমন বমি পেট ব্যথা মাথা ঘোরা কিংবা হজমের সমস্যা। গর্ভবতী অবস্থায় অনুদান কারী মহিলাদের জন্য নিম পাতা বা নিমের তেল সেবন ঝুকিপূর্ণ হতে পারে। এছাড়া শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করা উচিত নয়। তাই বলা যায় নিম পাতার সঠিকভাবে ব্যবহার করলে আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং অতিরিক্ত বা ভুলভাবে ব্যবহার করলে তা ক্ষতিকর হতে পারে।
স্বাস্থ্য রক্ষায় নিম পাতার ব্যবহারের আগে সঠিক পরিমাণ ও পদ্ধতি জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ আর নয়। এরকম আরো তথ্য বা সে বাপিতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন সবাইকে ধন্যবাদ।

ক্রিয়েটিভ ভেরিটিনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url