ঘন ঘন জ্বর হওয়ার কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন
ঘন ঘন জ্বর হওয়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আপনি জানতে চাচ্ছেন। তাহলে এই আর্টিকেলটি শুধু আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন কেন আপনার ঘন ঘন জ্বর হচ্ছে এবং কিভাবে এর প্রতিকার করতে পারবেন।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা কারণে ঘন ঘন জ্বর হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা বুঝতে পারি না আমাদের এই জ্বর আসার কারণ? আপনি যদি এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলেই বুঝতে পারবেন কেন আমাদের জ্বর হয় এবং এর থেকে বাঁচার উপায় কি? চলুন কথা না বাড়িয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ঘন ঘন জ্বর হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
- ঘন ঘন জ্বর হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
- ঘন ঘন জ্বর হওয়া কিসের লক্ষণ
- বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হওয়ার কারণ
- কোন ভিটামিনের অভাবে ঘন ঘন জ্বর হয়
- শিশুর জ্বর ১০২ হলে করণীয়
- অতিরিক্ত জ্বর হলে কোন ঔষধ খাওয়া উচিত
- ঘন ঘন জ্বর আসার কারণ কি কি
- ঘন ঘন জ্বর আসলে কিছু ঘরোয়া টিপস
- শেষ কথা, ঘন ঘন জ্বর হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
ঘন ঘন জ্বর হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
ঘন ঘন জ্বর হওয়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। আমাদের
দৈনন্দিন জীবনে জ্বর মানবদেহের একটি সাধারণ প্রতিক্রিয়া, যা শরীরে কোন সংক্রমণ
বা অসুস্থতা দেখা দিলে জ্বর হয়। তবে অনেকেই ঘন ঘন জ্বর হয়ে থাকে যা সাধারন নয়
বরং এর পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকে। ঘন ঘন জ্বরের অন্যতম কারণ হলো ভাইরাস বা
ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, যেমন সর্দি কাশি টনসিল এর ইনফেকশন ম্যালেরিয়া
টাইফয়েড বা ডেঙ্গু।
অনেক সময় দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অপুষ্টি মানসিক চাপ ঘুমের অভাব এবং
অতিরিক্ত ক্লান্তিও শরীরকে বারবার জোরে আক্রান্ত করে থাকে। আমরা যদি ঠিকমত খাবার
না খাই তাহলেই এই সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও পরিবেশগত কারণেও এটি হয়ে থাকে যেমন
দূষিত প্রাণী বা খাবার গ্রহণ নোংরা পরিবেশে বসবাস কিংবা মৌসুমী আবহাওয়ার
পরিবর্তনে ঘন ঘন জ্বর হয়ে থাকে। শিশুরা এবং বয়স্করা বিশেষভাবে এই সমস্যায়
ভোগেন। কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম বা দুর্বল থাকে।
তবে এই সমস্যার প্রতিকারের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন সঠিক কারণ নির্ণয় করা। বারবার
জ্বর হলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া হালকা ও
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া পরিষ্কার পানি পান করা এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে
চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের তাপমাত্রা কমাতে পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার
গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া উচিত।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। আমরা যদি
সঠিক সুষম খাদ্য নিয়মিত খেতে পারি তাহলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
পারবো। নিয়মিত ব্যায়াম পর্যাপ্ত ঘুম শোষণ খাদ্য এবং মানসিক প্রশান্তি বজায়
রাখলে ঘন ঘন জ্বরের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
ঘন ঘন জ্বর হওয়া কিসের লক্ষণ
ঘন ঘন জ্বর হওয়া আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে কোন অসামঞ্জস্য বা রোগের ইঙ্গিত হতে
পারে। সাধারণত জ্বর হচ্ছে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার একটি
প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়া যা ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোন সংক্রমনের বিরুদ্ধে
কাজ করে। তবে যখন কোন ব্যক্তি ঘন ঘন ঝরে আক্রান্ত হয় তখন সেটি শরীরের লুকিয়ে
থাকা কোন দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা বা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার লক্ষণ হতে
পারে।
ঘন ঘন জ্বর হওয়ার অন্যতম কারণ হলো দুর্বল ইমিউন সিস্টেম। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা
কমে গেলে সাধারনত ঠান্ডা সর্দি কাশি কিংবা সংক্রমণ থেকেও বারবার জ্বর দেখা দিতে
পারে। এছাড়া টাইফয়ে ড টিউবারকিউলোসিস(টিভি), ডেঙ্গু বা ইউরিনারি টাক্ট ইনফেকশন
ও ম্যালেরিয়া এর মত দীর্ঘস্থায়ী বা পুনরাবৃত্ত রোগেরও একটি লক্ষণ হতে পারে।
অনেক সময় এলার্জি থাইরয়েডের সমস্যা বা রক্তের ইনফেকশন থেকেও এমন অবস্থা তৈরি
হয়।
এছাড়াও অতিরিক্ত মানসিক চাপ অপর্যাপ্ত ঘুম অপুষ্টি বা অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন
আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে যা ঘন ঘন জ্বরের কারণ হতে পারে।
যদি জ্বরের সাথে ওজন কমে যায় রাতে ঘাম হওয়া শরীর দুর্বলতা বা অবিচ্ছন্নতা দেখা
দেয় তবে এটি গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার
জরুরী। সঠিক কারণ নির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে ঘন ঘন জ্বরের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে
আনা সম্ভব।
বাচ্চাদের হঠাৎ জ্বর হওয়ার কারণ
আমাদের বাচ্চাদের হঠাৎ যদি জ্বর হয় তাহলে আমরা অনেক সময় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠি।
কিন্তু জ্বর হওয়া সাধারণ একটা ঘটনা, জ্বর সাধারণত শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা
সক্রিয় হওয়ার একটি লক্ষণ। যখন শরীরে কোন সংক্রমণ বা ভাইরাস প্রবেশ করে তখন
শরীরে তাপমাত্রা বাড়িয়ে সেই জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। শিশুদের হঠাৎ জ্বরের
সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো ভাইরাস ইনফেকশন যেমন সর্দি-কাশি ফ্লু বা গলা
ব্যথা।
এছাড়াও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন যেমন টনসিলাইটিস নিউমোনিয়া বা ইউরিনারি ট্র্যাক
ইনফেকশন থেকেও জ্বর হয়ে থাকে। কখনো কখনো টিকা দেওয়ার পর বা দাঁত ওঠার সময় ও
সামান্য জ্বর দেখা দেয়। পরিবেশ পরিবর্তন ধুলাবালি বা শরীরের পানি শূন্যতা ও
বাচ্চাদের জ্বরের কারণ হতে পারে। যদি বাচ্চার জ্বর তিন দিনের বেশি স্থায়ী হয় বা
তার সঙ্গে বমি খাওয়ার অনীহা ঘাম বা খিঁচুনি দেখা দেয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের
পরামর্শ নেওয়ার জরুরী। পর্যাপ্ত পানি পান করানো হালকা খাবার খাওয়ানো এবং
বিশ্রাম দেওয়া বাচ্চাদের দ্রুত আরোগ্যে সাহায্য করে।
যার হল শরীরের সতর্ক সংকেত তাই অবহেলা না করাই উত্তম। শিশুরা সাধারণত মাটিতে খেলা
করে আর মাটি থেকে বিভিন্ন রোগ জীবাণু সহজেই আক্রমণ করতে পারে। আর এই রোগের
আক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবেই জ্বর অনুভব করা যায়। আর মূলত এই কারণেই শিশুদের
ঘন ঘন জ্বর হয়ে থাকে। মশার কামড়ে ছাড়া মশার কামড়েও নানা ধরনের ভাইরাস
সংক্রমনে জ্বর হয়ে থাকে।
কোন ভিটামিনের অভাবে ঘন ঘন জ্বর হয়
ঘন ঘন জ্বর হওয়া মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়ার একটি
গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। সাধারণত ভিটামিনের ঘাটতি থাকলে মানুষের শরীরে ইমিউন সিস্টেম
দুর্বল হয়ে যায় ফলে দেহে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের সহজে আক্রান্ত হয়ে
যায়। বিশেষ করে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি সিক্স এবং ভিটামিন ডি এর অভাবে ঘন ঘন
জরের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়। ভিটামিন সি মানবদেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
হিসেবে কাজ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
এটি আমরা নিয়ম করে যদি লেবু ,কমলা, আমলকি, পেয়ারা, ইত্যাদি খেয়ে থাকি তাহলে
ভিটামিন সি এর অভাব দূর হবে। ভিটামিন ডি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ও সক্রিয় রাখে এবং
সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই সাহায্য করে। সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
এছাড়া ডিমের কুসুম মাছ এবং দুধেও এটি পাওয়া যায়। ভিটামিন বি সিক্স মানব দেহে
এনজাইম ও সাদা রক্তকণিকা উৎপাদনের সাহায্য করে যা সংক্রমণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখে।
আমরা যে সকল ফলমূল যেমন কলা বাদাম ও ডাল জাতীয় খাবার খাই সেগুলো থেকে আমরা
ভিটামিন বি সিক্স পেয়ে থাকি। তাই বলা যায় ঘন ঘন জ্বর হলে শুধু ওষুধ নয় বরং
পুষ্টিকর ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াও আমাদের উচিত। আমাদের সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও
নিয়মিত সূর্যালোক গ্রহণ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং জ্বরের
ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে সাহায্য করে।
শিশুর জ্বর ১০২ হলে করণীয়
যখন শিশুর শরীরে ১০২° ফারেনহাইট জ্বর হয় তখন তা মাঝারি থেকে উচ্চ জ্বরের মধ্যে
পড়ে এবং এতে বিশেষ সেবা যত্নের প্রয়োজন হয়। প্রথমেই শিশুর শরীরে তাপমাত্রা
সঠিকভাবে থার্মোমিটারে মেপে নিশ্চিত হতে হবে। এরপর তাকে পর্যাপ্ত পানি স্পোর্টস
স্যালাইন বা তরল খাবার খাওয়াতে হবে এবং ডাবের পানি খাওয়াতে হবে যেন শরীরের পানি
শূন্যতা না হয়। শিশুর জ্বর কমানোর জন্য শিশুকে হালকা কাপড় পরাতে হবে এবং ঘরে
তাপমাত্রা ঠান্ডা রাখতে হবে।
শিশুর শরীরের তাপ কমাতে কুসুম গরম পানি করে সেখানে কাপড় দিয়ে হাত পা ও কপালে
আলতো করে মুছে দিতে হবে। যদি ডাক্তার পূর্বে প্যারাসিটামল বা শিশুদের জন্য জ্বরের
ঔষধ দিয়ে থাকেন তা নির্দেশনা অনুযায়ী খাওয়াতে হবে। যদি শিশুর জ্বর ২ দিনেও না
কমে অথবা খাওয়াই অনীহা শ্বাসকষ্ট বমি খিঁচুনি বা অজ্ঞান হওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়
তাহলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরী।
শিশুর জ্বর অনেক সময় ভাইরাল ইনফেকশন বা টনসিলের কারণে হতে পারে যা সঠিক চিকিৎসা
ছাড়া জটিল অবস্থা হাই রূপ নিতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আতঙ্কিত না
হয়ে শিশুর কে আন্ত্য রাখা পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া এবং পর্যাপ্ত পানি পান এবং
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। এতে শিশুর জ্বর দ্রুত কমেও সে দ্রুত
সুস্থ হয়ে উঠবে।
অতিরিক্ত জ্বর হলে কোন ঔষধ খাওয়া উচিত
অতিরিক্ত জ্বর হলে আমরা অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি কিন্তু সঠিকভাবে চিকিৎসা
নেওয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে শরীরে
তাপমাত্রা যদি ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হয় তাহলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া
জরুরী। প্রথমেই রোগীকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং শরীরে পানি শূন্যতা রোধে
পানি ওর স্যালাইন বা গ্লুকোজ অথবা ডাবের পানি খাবার খাওয়া উচিত। জ্বর কমানোর
জন্য সবচেয়ে প্রচলিত ও নিরাপদ ঔষধ হল প্যারাসিটামল।
আমরা অসুখ হলেই প্যারাসিটামল সেবন করে থাকি সেটি আমাদের শরীরে তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যথা যেমন মাথা ব্যাথা শরীর ব্যথা
ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে। সাধারণত ৫০০ মিলিগ্রাম থেকে ৬০০ মিলিগ্রাম
প্যারাসিটামল ৬ ঘন্টা পর পর খাওয়া যেতে পারে তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া
অতিরিক্ত সেবন করা উচিত নয়। যদি জ্বরের সঙ্গে গলা ব্যথা কাশি বা সংক্রমণের লক্ষণ
থাকে তবে কারণ অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারে।
নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বিপদজনক হতে পারে। তাই এটি শরীরের ক্ষমতা নষ্ট
করে ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। অতিরিক্ত জ্বর দুই দিনের বেশি স্থায়ী
হলে বা বমি খিঁচুনি অথবা অজ্ঞান হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের
কাছে যেতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে,ওষুধের পাশাপাশি পর্যাপ্ত বিশ্রাম পুষ্টিকর বা
সুষম খাবার খাওয়া উচিত যা আমাদের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
ঘন ঘন জ্বর আসার কারণ কি কি
ঘন ঘন জ্বর হওয়া মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এটি
সাধারণত ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ অপুষ্টি এবং ভিটামিনের অভাব এর কারণেও
ঘন ঘন জ্বর হয়ে থাকে। ঘনঘন জ্বর হলে শরীরের ইউন সিস্টেম ঠিকমতো কাজ করে না যা
সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। নিচে ঘন ঘন জ্বরের দশটি প্রধান কারণ দেওয়া হলো
- ভাইরাস ইনফেকশন সর্দি কাশি, বা ফ্লু ।
- ঘুমের অভাব
- মানসিক চাপ ও ক্লান্তি
- ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
- শরীরের পানি শূন্যতা
- দূষিত পানি বা অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ
- পরিবেশের হঠাৎ পরিবর্তন হওয়া
- নিউমোনিয়া বা শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশনা
- এলার্জি ও পরিবেশ দূষণ
- টনসিলের সমস্যা
ঘন ঘন জ্বর আসলে কিছু ঘরোয়া উপায় বা টিপস
ঘনঘন জ্বর হলে প্রথমে মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরী। ঔষধের
পাশাপাশি কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলে আপনার জ্বর প্রতিরোধে সাহায্য পাওয়া
যায়। নিচে কিছু কার্যকর ঘরোয়া টিপস দিলাম
- তুলসী পাতা চা : আমরা জ্বর হলেই তুলসী পাতার রস খেয়ে থাকি যা জীবাশুক হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন এক কাপ তুলসী পাতা রস খেলে জ্বর কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- আদালেবু চা : প্রতিদিন সকালে আমরা যদি আদা লেবুর চা খাই তাহলে শরীর গরম রাখে ও ভাইরাস প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- গরম পানিতে স্নান: জ্বর থাকা অবস্থায় প্রতিদিন গরম পানিতে স্নান করলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- ওরস্যালাইন বা লবণ চিনি মিশ্রিত পানি: আমরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলে ওর স্যালাইন বা লবণ গুড় বা চিনি মিশ্রিত পানি পেয়ে থাকি যা পানি শূন্যতা দূর করে থাকে।
- মধু ও আদা মিশিয়ে খাওয়া : আমরা প্রতিদিন মধু ও আদা মিশে একসাথে খেলে আমাদের কপ ও গলা ব্যথা কমে যায়।
- আমলকি বা লেবুর রস : আমলকি বাল লেবুর রস খেলে ভিটামিন সি সরবরাহ করে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে।
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া : আমরা যদি পর্যাপ্ত ঘুমাই বা বিশ্রাম নেই তাহলে শরীর সংক্রমণ মোকাবেলায় সাহায্য করে।
- হালকা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া : আমাদের উচিত বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার খাওয়া যা মানব দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- ধুলাবালি ও ঠান্ডা এড়িয়ে চলা : বিশেষ করে শিশুদের ধুলাবালি ও ঠান্ডা থেকে দূরে রাখায় উত্তম। কারণ ধুলাবালি থেকে রোগ সংক্রমণ বাড়ে।
- নিয়মিত গরম পানি পান করা: নিয়মিত গরম পানি পান করলে শরীর পরিষ্কার ও জীবাণমুক্ত থাকে। বরই পাতা দিয়ে গোসল করলে শরীর পরিষ্কার হয়ে যায়
এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে ঘন ঘন জ্বরের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
শেষ কথা, ঘন ঘন জ্বর হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
ঘন ঘন জ্বর হওয়ার কারণ ও প্রতিকার ওপরের লেখাটি থেকে আমরা নিশ্চয়ই জানতে
পারলাম। আসলে মানবদেহে ঘনঘন জ্বর হওয়া কোন সাধারন বিষয় নয়, এটি শরীরের ভেতরের
দুর্বলতা বা সংক্রমনের ইঙ্গিত দেয়। ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ
ভিটামিনের ঘাটতি অনির মধ্যেও জীবন যাপন এবং দূষিত খাবার এসবের প্রধান কারণ হতে
পারে। তাই জ্বর বারবার হলে শুধু ওষুধ খাওয়াই নয় বরং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়ানো জরুরী।
তাই পর্যাপ্ত ঘুম পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ নিয়মিত ব্যায়াম ও বিশুদ্ধ পানি পান করলে
শরীর নিজেই রোগের সঙ্গে লড়াই করতে সক্ষম হয়। এই ঘন ঘন জ্বর হওয়া য় অনেক শিশু
দুর্বল হয়ে যায় তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত।
তাই বলা যায় সচেতনতা ও যত্নই ঘন ঘন জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়। আজকে এই
পর্যন্তই । এরকম আরো তথ্য বা সেবা পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন সবাইকে
ধন্যবাদ।



ক্রিয়েটিভ ভেরিটিনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url